সে এক অভিশাপ। আশীর্বাদও। কষ্ট দিয়েছে যেমন,তেমনই দিয়েছে ঢের ঢের আহ্লাদ। শান্তি। ভালো থাকার উসকানি। সেই সব মাঠঘাট,নদীনালা,হাওড়বাঁওড়,গরুগাড়ির চাকার সুদীর্ঘ পাণ্ডুলিপি,জলের আলপনা,নৌকো, ভেড়ি আজও ঘাসবনে অম্লান। তারই মাঝে রক্ত। বেনোজল। দখলদারি। সাপ। মাছ। কাঁকড়া। পাখির কিচিরমিচির। এর ফাঁকেই অমিতের জন্ম। সীমান্ত শহর বনগাঁর সীমান্তে। সালটা ১৯৮০। পঞ্চাশের দশকে সাধের স্বাধীনতার শব কাঁধে নিয়ে বাপঠাকুরদার হেথাহোথা আশ্রয়ের খোঁজ। চলে উদ্বাস্তু-উদ্বাস্তু খেলা। চলতে চলতে একসময় হাতের মুঠো খুলে পেয়ে যায় এক আশ্চর্য ঠিকানা। এভাবেই আরও এগোনো। সেই শব এখন অমিতের কাঁধে! তাকে নিয়ে প্রতিরাতে অমিত হেঁটে যায় বহুদূর। ভোর হবার আগেই ফিরে আসে,আর কেঁদে ফেলে বিষণ্ণ গাবের মতো। তবু এ-গন্তব্য অধরা। আর কতদূর? ‘আর কতদূর গেলে আমাদের বাড়ি?’সেই অন্বেষণে অমিত। শূন্য থেকে আরও শূন্যে পথচলা। কখনও-বা শব্দের চালাঘরে রাত্রিযাপন।
অমিত মূলত গল্পকার। তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘রাত্রির হৃদয়ে এখন নীল শুঁয়োপোকা’।এই গল্পবইটি প্রসঙ্গে এই সময়ের প্রখ্যাত কবি বিভাস রায়চৌধুরী এক জায়গায় লিখেছিলেন, “প্রকৃত শিল্পীর কাজ গল্প বলা নয়, জীবনের মধ্যে একটি গল্পের সত্তাকে আবিষ্কার করা। সে লক্ষণ প্রতিটি গল্পে আছে বলেই অমিতকে নবীন শিল্পীর মর্যাদা দিতে আমি দ্বিধাহীন।”
Comments
Post a Comment