Skip to main content

Posts

Showing posts from June, 2015

।। 'নয়ন ছেড়ে চলে গেলে' ।। রাস্কিন বন্ড ।।

' নয়ন ছেড়ে চলে গেলে '   রাস্কিন বন্ড মূল গল্প: The Eyes Have It                               ভাষান্তরঃ অমিতকুমার বিশ্বাস              রোহানা পর্যন্ত ট্রেনের কামরায় একাই ছিলাম। একটি মেয়ে তারপর  উঠল। যে দম্পতি তাঁকে বিদায় জানাতে এসেছিল সম্ভবত তাঁরা তাঁর বাবা-মা  ছিলেন। মনে হল তাঁরা তাঁর ভালোমন্দ নিয়েও বেশ উদ্বিগ্ন। আর কোথায় জিনিসপত্র   রাখতে হবে , কখন জানলা দিয়ে ঝুঁকবে না , এবং কীভাবে অপরিচিত লোকেদের সাথে  বাক্যালাপ এড়িয়ে চলবে--এসব বিষয়ে ভদ্রমহিলাটি মেয়েটিকে সবিস্তারে জানিয়ে দিল।               তাঁরা বিদায় শুভেচ্ছা জানালেন , আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ট্রেনটি স্টেশন  ছেড়ে এগিয়ে যেতে লাগল। যেহেতু আমি সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন , যেহেতু কেবলমাত্র আলো  আর আঁধার অনুভূত হয় আমার চোখে , সেহেতু মেয়েটি ঠিক কেমন দেখতে তা আমার পক্ষে বলা মুশকিল ছিল। তবু তাঁর গোড়ালিতে চটাস চটাস শব্দ শুনে আমি বুঝেছিলাম সে ঘরে পরার চটি পরেছিল।             তাঁকে কেমন দেখতে এটা বুঝে উঠতে আমার বেশ কিছুটা সময় নিতে হবে , আর হয়তো আমি কখনোই তা বুঝতে পারব না। তবু তাঁর কন্ঠস্বর আমার ভারি ভালো লাগল , আর ভালো লাগল ত

অনূদিত গল্প ।। মার্কেজ

গভীর মনোবেদনায় সেই  তিন স্বপ্নচর অথবা তিন রাতচরা আর ওদের যা যা ভালোলাগত না গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস মূলগল্প:  Amargura Para tres sonambulos ভাষান্তরঃ অমিতকুমার বিশ্বাস গল্পটি গ্রেগরি রাবাস্যা ও জে এস বের্নস্টেইনের স্প্যানিশ থেকে অনুদিত ইংরেজি গল্প  ‘Bitterness fort Three Sleepwalkers’ থেকে বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। গল্পটির দ্বিতীয় নামকরণটি করেছেন তমাল বন্দ্যোপাধ্যায়।            তাহলে তাঁকে বাড়ির এক কোনায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় পেলাম। বিশেষত তার জিনিসপত্র আনার আগে -অর্থাৎ তার কাপড়চোপড় যেগুলি থেকে সদ্য টুকরো করে কাটা কাঠের গন্ধ বের হচ্ছিল , কাদায় হাঁটার জন্য তাঁর ওজনহীন জুতো নিয়ে  আসার আগে কেউ একজন বলেছিল , এরকম মন্থর জীবনের সাথে সে মানিয়ে নিতে পারবে না , কারণ তাঁর সুস্থ রুচি কিংবা কোনো আকর্ষণ কিছুই নেই , থাকার মধ্যে   আছে কেবল জটার মতো এক কঠোর নিঃসঙ্গতা , যা তাঁকে সর্বদা তাড়া করে বেড়াত। আরেকজন বলেছিল- তাঁর একটা শৈশবও ছিল , যা মনে করতে আমাদের  বেশ কিছুটা  সময় লেগেছিল। হয়তো সে সময় তা আমরা বিশ্বাস করতে চাইনি ; কিন্তু তাঁকে এক কোনায় ভয়ার্ত চোখে ঠোঁটের উপ

ছোটগল্প ।। দৃষ্টি ।।

‘দৃষ্টি’ গল্পটি   ' রাত্রির হৃদয়ে এখন নীল শুঁয়োপোকা '   থেকে নেওয়া হয়েছে। প্রথম প্রকাশিত হয়   ' অচেনা যাত্রী’-তে - এ ,   ২০ ১৩ -এ।   ' ইতিকথা এখন ' (ISSN: 2394-1456)-এর বইমেলা-২০১৫ সংখ্যাটিতে বিশিষ্ট কবি বিভাস রায়চৌধুরী লিখেছেন ,"' সাপ’ ও ‘দৃষ্টি’ গল্পের মধ্যেও ভাস্কর্য মূলক নির্মিতির ছাপ টের পাই। বোঝা যায়, গল্পের বিষয় শুধু নয়, গল্পের আঙ্গিক নিয়েও অমিত চর্চা করতে চায়।”   দৃষ্টি অমিতকুমার বিশ্বাস               পথটা সরু । দু ' পাশে সারি সারি গাছ । ঘন। একটা বিন্দুতে এসে মিসেছে । আর সেদিকেই দৃষ্টি । পথে নয় , পথের উপর হেঁটে যাওয়া এক নদীর উপর । নদী ? হ্যাঁ নদী।রূপসা । সে - তো নদীর - ই নাম । নদীর মতোই ঢেউ খেলে যায় ।ছোঁয়া   লাগলেই কাঁটা দেয় ।পবিত্র হয় শরীর । নদীতেই তো পাপমোচন । শাপমোচনও ।            রূপসা এবারে ছোটে। প্রকান্ড ঢেউ । মাটি কাঁপে। প্রথমে মৃদু । পরে বাড়ে ।বেড়ে যায় । ক্রমশ । এ এক মানানসই   চলন । সম্মুখে সমুদ্র । ঘাসবনের ।এখানেই সঙ্গম । সুতীব্র। রূপসা এবারে পিছনে তাকায়। হরিণীর মতো । বঙ্কিম গ্রীবা । হেলানো নিতম্ব। অম

ছোটগল্প ।। বেড়াল ।। অমিতকুমার বিশ্বাস ।।

' বেড়াল ' গল্পটি ' রাত্রির হৃদয়ে এখন নীল শুঁয়োপোকা ' থেকে নেওয়া হয়েছে। প্রথম প্রকাশিত হয় ' দ্বৈপায়ন’-এ , ২০০ ৩ -এ । ' ইতিকথা এখন ' (ISSN: 2394-1456)-এর বইমেলা-২০১৫ সংখ্যাটিতে বিশিষ্ট কবি বিভাস রায়চৌধুরী লিখেছেন ,"' বেড়াল ' গল্পটিকে অণুগল্প বলব। অণুগল্প কি কেবলই একটি আকার ? আমি শুধু বলতে চাই এত টুকু অতিরিক্ত নেই বলেই এই গল্পটি দীর্ঘস্থায়ী কীর্তি। পাঠককে এই গল্পটি মন দিয়ে পড়তে অনুরোধ করছি।"   ছোটগল্প  বেড়াল অমিতকুমার বিশ্বাস                  একটা মরাকান্না ফাঁকফোঁকড় সম্বল করে   ঘরের দেওয়াল চুঁইয়ে পড়ছে । এ কান্না কিসের ? এত করুণই - বা কেন ? শ্যামলী আত্মঘাতী হলে তার মা এমনই শেষবার কেঁদেছিল ।   একমাত্র মেয়েটা ওই শীতের রাতে উঠানের চালতা   গাছটাতে অভাবে ঝুলে থাকবে -- তার মা ভাবতেই পারেনি ।                আধঘুম থেকে বিছানায় উঠে বসে উৎসব । হাতের কাছের   চাদরটা কোনওমতে   গায়ে জড়িয়ে ঘরের মেঝেতে দাঁড়ায় । তারপর কি এক অনিবার্য   ডাকে সাড়া পেয়ে দরজার দিকে এগোয় । দরজা পেরিয়ে চিলেকোঠা , চিলেকোঠা পেরিয়ে উন্মুক্ত ছাদ । ছাদে