Skip to main content

।। 'নয়ন ছেড়ে চলে গেলে' ।। রাস্কিন বন্ড ।।


'নয়ন ছেড়ে চলে গেলে' রাস্কিন বন্ড
মূল গল্প: The Eyes Have It                              
ভাষান্তরঃ অমিতকুমার বিশ্বাস

             রোহানা পর্যন্ত ট্রেনের কামরায় একাই ছিলাম। একটি মেয়ে তারপর  উঠল। যে দম্পতি তাঁকে বিদায় জানাতে এসেছিল সম্ভবত তাঁরা তাঁর বাবা-মা  ছিলেন। মনে হল তাঁরা তাঁর ভালোমন্দ নিয়েও বেশ উদ্বিগ্ন। আর কোথায় জিনিসপত্র   রাখতে হবে, কখন জানলা দিয়ে ঝুঁকবে না, এবং কীভাবে অপরিচিত লোকেদের সাথে  বাক্যালাপ এড়িয়ে চলবে--এসব বিষয়ে ভদ্রমহিলাটি মেয়েটিকে সবিস্তারে জানিয়ে দিল।
              তাঁরা বিদায় শুভেচ্ছা জানালেন, আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ট্রেনটি স্টেশন  ছেড়ে এগিয়ে যেতে লাগল। যেহেতু আমি সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন, যেহেতু কেবলমাত্র আলো  আর আঁধার অনুভূত হয় আমার চোখে, সেহেতু মেয়েটি ঠিক কেমন দেখতে তা আমার পক্ষে বলা মুশকিল ছিল। তবু তাঁর গোড়ালিতে চটাস চটাস শব্দ শুনে আমি বুঝেছিলাম সে ঘরে পরার চটি পরেছিল।
            তাঁকে কেমন দেখতে এটা বুঝে উঠতে আমার বেশ কিছুটা সময় নিতে হবে, আর হয়তো আমি কখনোই তা বুঝতে পারব না। তবু তাঁর কন্ঠস্বর আমার ভারি ভালো লাগল, আর ভালো লাগল তাঁর চটির আওয়াজ।
'আপনি কি দেরাদুন পর্যন্তই যাবেন?'
আমি নিশ্চয়ই এক অন্ধকার কোণে বসেছিলাম, কারণ আমার কণ্ঠস্বর তাঁকে চমকে দিয়েছিল। সে একটু অবাক হয়েই বলল,'আর কেউ আছে কিনা আমি বুঝতে পারিনি!'
           ঠিক, এরকম তো মাঝেমধ্যেই হয় যখন ভালো  দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন লোকেরা তাদের সামনে কী আছে তা বুঝতে পারে না। মনে হয়, তাদের এত কিছু দেখার  আছে যে তারা হয়তো তাই দেখতে পায় না ; যেখানে যারা ভালো দেখতে পায় না অথবা খুব কম দেখে তারা শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলোতে গুরুত্ব দেয়, যা তাদের বাকি ইন্দ্রিয়গুলিকে দারূনভাবে চাঙ্গা রাখে।
'আমিতো আপনাকে লক্ষ্যই করিনি,' আমি বললাম,' কিন্তু বুঝতে পেরেছি আপনি এসেছেন'
আমি ভেবে পাই না আমার অন্ধত্ব প্রকাশ পাওয়া থেকে আমি তাঁকে বিরত করতে পারব কিনা। মনে হয় এটা হয়তো খুব একটা কঠিন কাজ হবে না যদি কিনা আমি নিজের বসার জায়গাটায় স্থির থাকি।
'আমি সাহারানপুরে নামছি। কাকিমা আমাকে নিতে আসছেন।'
'তাহলে বরং খুব বেশি পরিচিতি বাড়িয়ে লাভ নেই। কাকিমারা সাধারণত  জাঁদরেল  হয়ে থাকেন।'
'তা আপনি কোথায় যাচ্ছেন?'
'এই প্রথমে দেরাদুন, আর তারপর মুসৌরি।'
'ওহ আপনি কী সৌভাগ্যবান! আমার মুসৌরি যেতে ইচ্ছে করে। আমার পাহাড়-পর্বত দারুণ লাগে, বিশেষ করে অক্টোবরে!'
'হ্যাঁ, এটাই তো সবথেকে আদর্শ সময়,' স্মৃতিকে ভর  করে বললাম,' বুনো ডালিয়ায় পাহাড়গুলি ঢেকে যায়, সূর্যের কিরণ তখন চমৎকার থাকে, আর রাতের বেলা আপনি  কাঠ জ্বেলে তার সামনে বসে একটু ব্রান্ডি খেতে পারবেন। বেশিরভাগ পর্যটকেরা এসময় বাড়ি ফিরে যায়, ফলে রাস্তাগুলো নিস্তব্ধ ও প্রায় জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে। হ্যাঁঅক্টোবরই সর্বোৎকৃষ্ট!'
সে চুপচাপ ছিল। আমি বুঝতে পারছিলাম না আমার কথাগুলো তাঁকে ছুঁয়ে যাচ্ছিল কিনা অথবা সে আমাকে এক রোমান্টিক নির্বোধ মনে করল কিনা। ঠিক তক্ষুনি আমি ভুলটা করেছিলাম।
'বাইরেটা কেমন দেখাচ্ছে?'

মনে হল সে এরকম প্রশ্নে অদ্ভুত কিছু খুঁজে পেল না। আচ্ছা আমি যে দৃষ্টিহীন সেটা  কি তাঁর নজরে এসেছে? কিন্তু তার পরের প্রশ্ন আমার সন্দেহ দূর করে দিল।
'আপনি জানলা দিয়ে কেন বাইরেটা দেখছেন না?'
আমি স্বচ্ছন্দে বার্থ বরাবর এগিয়ে এসে জানলার চৌকাঠটা অনুভব করলাম। জানলাটা খোলা ছিল। আর জানলাটার দিকে মুখ ফিরে থাকলাম, যেন সম্মুখের নৈসর্গিক দৃশ্য আমি পর্যবেক্ষণ করছি। ইঞ্জিনের ধকধকানি, চাকার ঘরঘরানি শুনছিলাম, আর মনের চোখে টেলিগ্রাফের খুঁটিগুলোর দ্রুত পেরিয়ে যাবার দৃশ্য অনুভব করলাম। সাহস করেই বলে উঠলাম-
'আপনি খেয়াল করেছেন গাছগুলি ছুটছে যেখানে মনে হচ্ছে আমরা স্থির আছি?'
'এমনটাইতো ঘটে থাকে। আপনি কি কোনো প্রাণী দেখতে পাচ্ছেন?'
'না তো!' বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বললাম, কারণ আমি জানতাম দেরাদুনের কাছাকাছি বনে প্রায় কোনো প্রানীই ছিল না।
জানলার পাশ থেকে ঘুরে মেয়েটির মুখোমুখি হলাম, আর কয়েক মুহূর্ত আমরা নীরবে বসে রইলাম।
'আপনার মুখটা কিন্তু দারুণ!' মনে হচ্ছে বেশ সাহসী হয়ে উঠেছি, কিন্তু মন্তব্যটা ছিল ঝুঁকিহীন।তোষামোদকে খুব কম মেয়েই দূরে ঠেলে রাখতে পারে। সে এ-কথায় মিষ্টি হাসল, বলা যায় সে এক মৃদু খিলখিল হাসি।
'আমার মুখটা যে দারুণ- এতা ভালো বললেন। কিন্তু আমার মুখটা সুন্দর একথা লোকের মুখে শুনতে শুনতে আমি বেশ ক্লান্ত!'
ওহো, তাহলে আপনার মুখটা সত্যিই সুন্দর! একথা ভাবতেই বেশ জোরে বলে উঠলাম,' শুনুন, একটা দারুণ মুখাবয়ব সুন্দর হতেই পারে!'
'আপনিনা খুব দুঃসাহসী যুবক! কিন্তু আপনি এতটা গম্ভীর কেন?'
ভাবলাম এবার তাঁর জন্য একটু হাসার চেষ্টা করে দেখি, কিন্তু এই হাসির চিন্তাটা আমাকে কেবল উদ্বিগ্ন ও নিঃসঙ্গ করে তুলল। 
'শীঘ্রই আমরা আপনার গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছি।'
'ভাগ্যিস এটা অল্পসময়ের ভ্রমণ! আমি না দু-তিন ঘন্টার বেশি ট্রেনে বসে থাকতে পারি না।
            হ্যাঁ, শুধুমাত্র তাঁর কথা শোনার জন্য যে-কোনো  সময়কাল ধরে বসে থাকতে প্রস্তুত ছিলাম।তাঁর কন্ঠস্বরে ছিল পাহাড়ি নদীর উচ্ছলতা। সে ট্রেনে ছেড়ে যেতে না যেতেই হয়তো এই অতি সংক্ষিপ্ত আলাপনের কথা ভুলে যাবে, কিন্তু তাঁর স্মৃতি আমার মনে বাকিটা ভ্রমণ পথ থেকে যাবে, হয়তোবা  আরো কিছুটা বেশি সময়!  
             ইঞ্জিনের বাঁশিটা তীক্ষ্ণ শব্দে বেজে উঠল। চাকাগুলো তাদের শব্দ ও ছন্দের পরিবর্তন ঘটাল।মেয়েটি উঠে পড়ে তাঁর জিনিসপত্র গোছাতে লাগল। আমি বুঝতে পারছিলাম না তাঁর চুলটাকি খোঁপা করা আছে না বিনুনি করা। সম্ভবত কাঁধের উপর তাঁর এলোচুল এসে পড়েছে, নাকি তাঁর চুলগুলো ছোটো করে কাটা
           ধীরে ধীরে ট্রেনটি ষ্টেশনে ঢুকল। বাইরে কুলি ও বিক্রেতাদের চিৎকার- চেঁচামেচি। আর কামরার দরজায় এক তীক্ষ্ণ মহিলাকন্ঠ, অবশ্যই সেই জাঁদরেল কাকিমার!
'চলি।'
           আমার খুব কাছেই সে দাঁড়িয়ে, এতই কাছে যে তাঁর চুলের সুগন্ধ আমাকে প্রলুব্ধ করছে। মনে হল হাত দিয়ে তাঁর চুলটা ছুঁয়ে দেখি। কিন্তু সে চলেই গেল। শুধু  তাঁর চুলের সুগন্ধ তখনও সেখানে ছড়িয়ে ছিল।
              দরজায় একটা হইহট্টগোল চলছিল। এক ভদ্রলোক কামরায় ঢুকে  আধোগলায় মার্জনা চাইলেন। দরজাটা তারপর দুড়ুম করে বন্ধ হয়ে গেল, আর গোটা জগৎটা আবার বন্ধ হয়ে এল। আমার জায়গায় ফিরলাম। গার্ড বাঁশি বাজাল আর  আমরা চলতে লাগলাম। আবার খেলার সুযোগ পেলাম, পেলাম এক নতুন সহযাত্রী।
             ট্রেনের গতি বাড়ছিল। চাকাগুলি সুর তুলল। কামরাটিও দুলেদুলে আওয়াজ করতে লাগল।জানলাটা পেয়ে তার সামনে গিয়ে বসলাম, কেবল চেয়ে রইলাম সেই আলোর দিকে যে আলো আমার কাছে এক গভীর আঁধার মাত্র।
            জানলার বাইরে কতকিছু ঘটে চলেছে, বাইরে যা ঘটছে তা অনুমান করাটা একটা বেশ মজার খেলা হতে পারে।
আগত যাত্রীটি আমার দিবাস্বপ্ন ভঙ্গ করল।
'আপনি নিশ্চয়ই হতাশ হবেন, কারণ সদ্য নেমে যাওয়া সহযাত্রীটির মতো আকর্ষণীয় ভ্রমণ সঙ্গী আমি নই!'
'সে এক দারুণ মেয়ে। আচ্ছা, আপনি কি একটু জানাবেন তাঁর চুলটা লম্বা না ছোটো?'
'ঠিক মনে করতে পারছি না'। একটু হতচকিত হয়ে আবার বললেন,' তার চোখদুটো কেবল দেখেছিলাম, তাঁর চুল নয়। তাঁর চোখদুটো সুন্দর, কিন্তু সেগুলো কাজের নয়। সে সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন। আপনি খেয়াল করেননি?'




*রবি ঠাকুরের একটি গান থেকে গল্পটির নামকরণ করেছেন তমাল বন্দ্যোপাধ্যায়।  

Comments

Popular posts from this blog

ছোটগল্প ।। ভূত , ভগবান এবং...

গল্পটি অচেনা যাত্রী -তে প্রকাশিত।  ছোটগল্প  ভূত, ভগবান এবং ... অমিতকুমার বিশ্বাস                       দুর্গানগর ছাড়তেই অন্ধকার নেমে এল। ভয়ে সিঁটিয়ে নুনি । ভাবছে কেউ চটকে খাবে। খুবলে খাবে। ঘামছে। দর দর করে। হাতের রুমালটা কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না সে । নাকটা দিব্বি   ফুলে যাচ্ছে। এবার হয়তো মাথাঘুরে পড়ে যাবে ...                       সবাইকে চমকে দিয়ে আলো এল কামরায় । মুখগুলো ভেসে ওঠে। সব। একে একে।    পাশের কাঁচাপাকা দাড়িমুখো , পিছনের টাকমাথাওয়ালা। এরকম আরও । লোকগুলো কত কাছে আবার কতদূরে। একদম ছবির মতো দেখতে পাচ্ছে সে । ছবিটা দেখতে দেখতে শান্ত হল মন। পরিচিত ছবি। একজন শুভানুধ্যায়ী ছবি থেকে উঠে এসে বল লেন , দিদিভাই লেডিসে আসতে পারেন কিন্তু ! মনে মনে নুনি বলে উঠল , আর লেডিস ! এদিকে ঘাম শুকিয়ে এসেছে। বুকের ধড়ফড়ানিও । থোকায় থোয়ায় ঝুলে থাকা একঘেয়ে আম আদমি। এইসব কার্বাইটে পরিপক্ক আম আদমির গন্ধ মাখতে মাখেতে নুনি চলে এসেছে বনগাঁ য় ।                         রাত । নুনি শুয়ে আছে বিছানায় । সবে রান্নাবানা খাওয়াদাওয়া সারল। ঘরে জিরো জ্বলছে। পাশে

ছোটগল্প ।। দৃষ্টি ।।

‘দৃষ্টি’ গল্পটি   ' রাত্রির হৃদয়ে এখন নীল শুঁয়োপোকা '   থেকে নেওয়া হয়েছে। প্রথম প্রকাশিত হয়   ' অচেনা যাত্রী’-তে - এ ,   ২০ ১৩ -এ।   ' ইতিকথা এখন ' (ISSN: 2394-1456)-এর বইমেলা-২০১৫ সংখ্যাটিতে বিশিষ্ট কবি বিভাস রায়চৌধুরী লিখেছেন ,"' সাপ’ ও ‘দৃষ্টি’ গল্পের মধ্যেও ভাস্কর্য মূলক নির্মিতির ছাপ টের পাই। বোঝা যায়, গল্পের বিষয় শুধু নয়, গল্পের আঙ্গিক নিয়েও অমিত চর্চা করতে চায়।”   দৃষ্টি অমিতকুমার বিশ্বাস               পথটা সরু । দু ' পাশে সারি সারি গাছ । ঘন। একটা বিন্দুতে এসে মিসেছে । আর সেদিকেই দৃষ্টি । পথে নয় , পথের উপর হেঁটে যাওয়া এক নদীর উপর । নদী ? হ্যাঁ নদী।রূপসা । সে - তো নদীর - ই নাম । নদীর মতোই ঢেউ খেলে যায় ।ছোঁয়া   লাগলেই কাঁটা দেয় ।পবিত্র হয় শরীর । নদীতেই তো পাপমোচন । শাপমোচনও ।            রূপসা এবারে ছোটে। প্রকান্ড ঢেউ । মাটি কাঁপে। প্রথমে মৃদু । পরে বাড়ে ।বেড়ে যায় । ক্রমশ । এ এক মানানসই   চলন । সম্মুখে সমুদ্র । ঘাসবনের ।এখানেই সঙ্গম । সুতীব্র। রূপসা এবারে পিছনে তাকায়। হরিণীর মতো । বঙ্কিম গ্রীবা । হেলানো নিতম্ব। অম

ছোটগল্প ।। রবীন্দ্রনাথ ।। অমিতকুমার বিশ্বাস ।।

'রবীন্দ্রনাথ'  গল্পটি 'রাত্রির হৃদয়ে এখন নীল শুঁয়োপোকা' থেকে নেওয়া হয়েছে। প্রথম প্রকাশিত হয় 'ঋতমঞ্জরী'-তে, ২০০৯-এ, সেখানে দ্বিতীয় পদ্যটি অন্যরকম ছিল, আর তৃতীয় পরবটি ছিল না। 'ইতিকথা এখন' (ISSN:2394-1456)-এর বইমেলা-২০১৫ সংখ্যাটিতে বিশিষ্ট কবি বিভাস রায়চৌধুরী লিখেছেন,"'রবীন্দ্রনাথ' গল্পে শ্লেষরসের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে অমিত। সময় এখানে যথার্থ নাটকীয়। অনেক কবিতায় কাহিনি যেমন বৃহৎ কিছুকে নির্দেশ করে, 'রবীন্দ্রনাথ' গল্পেও তেমনই প্রতীক ভেঙে জীবন্ত হয়ে উঠতে চাইছে লেখকের যন্ত্রণা, নিষ্ঠুর সমাজসত্য।"  রবীন্দ্রনাথ অমিতকুমার বিশ্বাস               তিনটি রাস্তা তিনদিকে ছুটে চলেছে । ত্রিমাথায় দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ । শুভ্র মর্মর মূর্তি । সেই সাত দশক ধরে দন্ডায়মান এক বৃদ্ধ । চতুর্দিকে কত পরিবর্তন ।বৃদ্ধেরও হয়েছে ।তবে যা হয়েছে তা সবই নেতিবাচক । সাদাচুল , সাদাদাড়ি - এখন সবই হলদেটে ।অনেক কিছুই সয়েছে মূর্তিটি । প্রবল বন্যা , আয়লা ইত্যাদি ।সেদিনের ঝড়ে মূর্তিটি প্রায় ভেঙেই যাচ্ছিল । প্রকান্ড ডালটা সামনেই পড়ল ।বৃদ্ধ তবু নির্বিকার ।তা